গাঁটি কচু আর চিংড়ি ঘরোয়া রান্নায় রাজকীয় স্বাদ।মাটির ঘ্রাণে চিংড়ি-গাঁটি কচুর ট্রেডিশনাল রেসিপি
চিংড়ি আর গাঁটি কচুর অসাধারণ স্বাদে ঘরোয়া এক মুখরোচক রেসিপি! সহজ উপায়ে রান্না করে দিন আপনার পরিবারের সদস্যদের চমক। আজই জেনে নিন এই সুস্বাদু দেশের খাবারটির রেসিপি।
আজকের রেসিপিটি যেমন মজার, তেমনি এর পেছনের গল্পটাও বেশ আকর্ষণীয়। এক সপ্তাহ আগে সেদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া গাঁটি কচু দিয়েও যে এত চমৎকার একটি পদ রান্না করা যায়, তা সত্যিই অবাক করার মতো! এই রেসিপিটি শুধু স্বাদে অতুলনীয় নয়, বরং এটি প্রমাণ করে যে সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ করলে সবজি দীর্ঘদিন ভালো থাকে। চলুন, দেখে নেওয়া যাক চিংড়ি দিয়ে গাঁটি কচুর এই সহজ ও সুস্বাদু রেসিপিটি।
উপকরণ:
- গাঁটি কচু / কচু মুখী - ২৫০-৩০০ গ্রাম (সেদ্ধ করে কেটে নেওয়া)
- চিংড়ি মাছ - ১০০-১৫০ গ্রাম
- পেঁয়াজ কুচি - ১টি (মাঝারি)
- টমেটো কুচি - ১টি (মাঝারি)
- রসুন বাটা - ১ চা চামচ
- হলুদ গুঁড়া - ১/২ চা চামচ
- মরিচ গুঁড়া - ১ চা চামচ (বা স্বাদমতো)
- গরম মসলা গুঁড়া - ১/২ চা চামচ
- আস্ত জিরা - ১/২ চা চামচ
- তেজপাতা - ১টি
- কাঁচা মরিচ - ৩-৪টি (চিরে নেওয়া)
- লবণ - স্বাদমতো
- তেল - ২-৩ টেবিল চামচ
- পানি - পরিমাণমতো
প্রস্তুত প্রণালী:
১. প্রস্তুতি: গাঁটি কচু আগে থেকে সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে মাঝারি আকারে টুকরো করে নিন।
২. ফোড়ন তৈরি: চুলায় একটি প্যান বসিয়ে তেল গরম করুন। তেল গরম হলে এতে আস্ত জিরা ও তেজপাতা দিয়ে দিন। ৩০ সেকেন্ডের মতো হালকা ভেজে নিন যতক্ষণ না সুন্দর গন্ধ বের হয়।
৩. মসলা কষানো: এবার প্যানে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। পেঁয়াজ নরম হয়ে এলে টমেটো কুচি দিয়ে দিন। সামান্য পানি ও লবণ দিন যাতে টমেটো তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে গলে যায়।
৪. টমেটো নরম হয়ে গেলে এতে রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া এবং গরম মসলা গুঁড়া দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করুন। মসলা যেন পুড়ে না যায়, তাই প্রয়োজনে অল্প পানি দিতে পারেন। ঢাকনা দিয়ে ঢেকে মাঝারি আঁচে মসলাটি কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন, যতক্ষণ না তেল উপরে ভেসে ওঠে।
৫. চিংড়ি রান্না: মসলা কষানো হয়ে গেলে এতে চিংড়ি মাছ দিয়ে দিন। ভালো করে নেড়েচেড়ে মসলার সাথে মিশিয়ে নিন। চুলার আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন এবং চিংড়ি সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
৬. কচু মেশানো: চিংড়ি কষানো হয়ে গেলে সেদ্ধ করে রাখা গাঁটি কচুর টুকরোগুলো প্যানে দিয়ে দিন। মসলা ও চিংড়ির সাথে ভালো করে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে ২-৩ মিনিট কষিয়ে নিন।
৭. শেষ ধাপ: এবার পরিমাণমতো পানি দিন, যাতে কচুর টুকরোগুলো মাখা মাখা হয়। ভালো করে নেড়ে দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রান্না করুন। পানি শুকিয়ে এসে ঝোল ঘন হয়ে গেলে উপরে কয়েকটি কাঁচা মরিচ ছড়িয়ে দিন।
৮. আপনার সুস্বাদু চিংড়ি-কচু রান্না একদম তৈরি!
পরিবেশন:
গরম ভাত বা রুটির সাথে এই চমৎকার গাঁটি কচুর রেসিপি পরিবেশন করুন।
বিশেষ টিপস:
গাঁটি কচু আগে থেকে সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে একটি এয়ারটাইট বক্সে করে ফ্রিজের নরমাল চেম্বারে রাখলে প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে। এতে ব্যস্ততার মাঝে রান্না করা অনেক সহজ হয়ে যায়।